# নিজস্ব প্রতিবেদক :-
কিশোরগঞ্জের একটি সেমিনারে জানানো হয়েছে, কোভিডের বন্ধের মধ্যে দু’টি বিদ্যালয়ের ২০২১ সালের ১৬ জন এসএসসি পরীক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে। এদের মধ্যে সদর উপজেলার আলহাজ্ব তাজমল খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ জন, আর হোসেনপুরের গলাচিপা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ জন। এর বাইরে আরও অনেক ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে বলে সেমিনারে জানানো হয়েছে।
বেসরকারি সংস্থা পপি’র উদ্যোগে আজ ২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বত্রিশ এলাকায় সংস্থাটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘নারী নির্যাতন ও বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে অংশীজনের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল ইসলাম সরকার। পপি’র জেলা সমন্বয়ক মুহাম্মদ ফরিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি জেলা মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মামুন-অর রশিদ, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ ও পপি’র উপ-পরিচালক খলিলুর রহমান ছাড়াও আলোচনা করেন জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোস্তফা কামাল, পাকুন্দিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, হোসেনপুরের মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম সাইফুল ইসলাম, পাকুন্দিয়ার তথ্য কর্মকর্তা সাবহা খন্দকার, গলাচিপা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাইয়ুম, আলহাজ্ব তাজমল খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তসলিমুর রহমান খান, জেলা কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল ইসলাম, কাজী ফজলুল হক প্রমুখ।
সভায় জানানো হয়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে চলতি সনের জুন মাস পর্যন্ত সদর উপজেলা, পাকুন্দিয়া উপজেলা এবং হোসেনপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট ৪৯৬টি মেয়ের বাল্যবিয়ে হয়ে গেছে। এর মধ্যে ২০টি বিয়ে হয়েছে কোন রকম নিবন্ধন ছাড়া। কেউ কেউ এরই মধ্যে তালাক পেয়ে বাবার বাড়ি ফিরেও এসেছে। কোন কোন নোটারি পাবলিক ও কাজী অসদোপায়ে বাল্যবিয়ের ব্যবস্থা করেছেন বলেও সেমিনারে তথ্য দিয়ে জানানো হয়। এর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এবং সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। তবে পপি’র কর্মীরা এই এক বছরে ৭৫৫টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন বলেও সেমিনারে জানানো হয়। সেমিনারে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের বাল্যবিয়ে বন্ধের বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ অনেক সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। কারণ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বাররা বাল্যবিয়ের বিষয়ে নিশ্চুপ থাকেন। এলাকার মোড়লরাও বাল্যবিয়ে বন্ধের বিষয়টি ভাল চোখে দেখেন না। ফলে এর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থার পাশাপাশি সচেতনতা গড়ে তোলার ওপর বক্তাগণ গুরুত্বারোপ করেছেন। সেমিনারে পিছিয়ে থাকা অংশের নারীদের শিক্ষা ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।